চীনের আকাশে বাংলার ঘুড়ি
Posted by PC Help & Tricks |  at 21:45
No comments
জোর লড়াই চলছে অন্য দেশের ঘুড়িয়ালের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘুড়িয়ালের। শেষ পর্যন্ত ৪৮ জন প্রতিযোগীর মধ্যে অষ্টম স্থানে বাংলাদেশ।
চীনের শানতুং প্রদেশের ওয়েইফাং শহরে পাঁচ দিনের আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের দ্বিতীয় দিনের ঘটনা এটি।
তুষারপাত ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে চীনের শানতুং প্রদেশের ওয়েইফাং শহরে ২০ এপ্রিল সকালে ৩০তম আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন হয়। বাংলাদেশসহ প্রায় ৪০টি দেশের ঘুড়ি-প্রেমিকরা পাঁচ দিনের এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন।
ওয়েইফাং শহরের প্রান্তে ফু-ইয়ান-শান আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উড্ডয়ন মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করে চীনের রাষ্ট্রীয় ক্রীড়া প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় ওয়েইফাং ইন্টারন্যাশনাল কাইট ফেডারেশন। ২০ এপ্রিল সকাল ৮টা থেকেই বিস্তৃত প্রান্তরে ঘুড়ি-প্রেমিকরা জমায়েত হতে থাকেন। ওয়েইফাংসহ চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে এর আগের দিন বিকেল থেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে শুরু হওয়া তুষারপাত তখনও চলছিল। পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকায় তুষারের আচ্ছাদন। মেঘলা আকাশ ও তুমুল তুষারপাত উপেক্ষা করে ওয়েইফাংয়ের আকাশে ওড়ে শত শত বিচিত্র বর্ণের ও আকৃতির ঘুড়ি। বরফ ঢাকা মাঠে বিভিন্ন বয়সের শত শত ঘুড়িয়ালের পদচারণা।
সকাল সাড়ে দশটায় উৎসবের উদ্বোধন হয়। চীনের ঐতিহ্যবাহী বেইজিং অপেরার শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সূচনা ঘটে উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক উৎসবের। পরপর পরিবেশিত হয় ড্রাগন নৃত্য, উশু এবং চীনের ঐতিহ্যবাহী অন্যান্য নৃত্য। শিল্পীদের বর্ণিল পরিবেশনা ও মেঘলা আকাশে অসংখ্য বর্ণিল ঘুড়ির উপস্থিতি পরিবেশকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে। ঘুড়ির জন্মভূমি চীনের ওয়েইফাংয়ের এই উৎসবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির উড্ডয়ন চলছিল সেদিন।
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেনুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দলে রয়েছেন মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, মাহমুদ হোসেন তওফিক বাবর, চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাংবাদিক শিহাবুর রহমান ও এই প্রতিবেদক।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ দলের সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আবদুস সামাদ ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় দিন ছিল প্রথম দিনের সম্পূর্ণ বিপরীত। ঝকঝকে রোদ। তুষারের চিহ্নমাত্র নেই কোথাও। চারদিকে ফাল্গুনের বাতাস বইছে। সকাল ৮টা থেকেই মাঠে উড়ছে বৈচিত্র্যময় ঘুড়ি। রয়েছে প্রজাপতি, পাখি, অক্টোপাস, ড্রাগন, স্টিং রে, পুতুলসহ বিভিন্ন রকম ত্রিমাত্রিক ঘুড়ি।
সকাল দশটায় শুরু হল কাটাকাটি লড়াই। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি-লাটাই নিয়ে অত্যাধুনিক হুইল আর ঘুড়ির সঙ্গে লড়াইয়ে নামলেন মো. রফিকুল ইসলাম। পুরান ঢাকার বংশালের যুবক তিনি। ছোটবেলা থেকেই ঘুড়ি উড়িয়েছেন, খেলেছেন কাটাকাটি খেলা। চীনের মাটিতে এসে নিয়মকানুন বুঝে নিতেও সময় লাগল কিছুক্ষণ। ভাষার সমস্যা তো রয়েছেই। তবু চীনের এক প্রতিযোগীর ঘুড়ি ‘ভা কাট্টা’ করে পৌঁছে গেলেন তৃতীয় রাউন্ডে।
বাংলাদেশের আরেক ঘুড়িয়াল আবদুস সামাদও বংশালের যুবক। ছোটবেলা থেকেই বাড়ির ছাদে আর ধূপখোলার মাঠে ঘুড়ি উড়িয়েছেন। চীনে এত ধরনের ঘুড়ি দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হলেন তিনি।
আগামীতে আধুনিক কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন দু’জনই।
কাটাকাটি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলের এক ঘুড়িয়ালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেন হংকংয়ের এক প্রতিযোগী।
ওয়েইফাংয়ে আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবে দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে অংশ নিচ্ছেন শাহজাহান মৃধা বেনু। তিনি বাংলাদেশে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি উড্ডয়নের পথিকৃৎ। দেশজ ঐতিহ্য ঘুড়ি উড়ানোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্বের অধিকারী তিনি। তাঁর সংগ্রহে আছে শতাধিক ধরনের ঘুড়ি। তিনি শুধু ঘুড়ি সংগ্রহই করেন না, নিত্যনতুন নকশার ঘুড়ি উদ্ভাবনও করেন। বললেন, “নিত্যনতুন ধরনের ঘুড়ি ওড়ানো ও দেখার অসাধারণ আনন্দের সঙ্গে দেশবাসীকে পরিচিত করাতে চাই।”
তিনি নতুন নকশার এলইডি ঘুড়িও সংগ্রহ করেছেন। আগামীতে আরও অনেক ধরনের ঘুড়ি উড্ডয়নের কৌশল আয়ত্ব করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। ঘুড়ির নতুন নকশা ও প্রযুক্তি অর্জনে সচেষ্ট তিনি। বললেন, “বাংলাদেশে আমরা বহুদূর এগিয়েছি, তবে এখনও অনেক পথ বাকি। নতুন প্রযুক্তি ও কৌশল অর্জনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমকক্ষ হতে হবে আমাদের।”
বিলম্বে বসন্ত এসেছে এবার। ফু-ইয়ান-শান পাহাড়ি উদ্যানজুড়ে বিভিন্ন গাছে সবুজ পাতা মেলেছে। যেদিকে চোখ রাখি শুধু দেখা যায় চেরি ফুলের সমারোহ। এরই মধ্যে ঘুড়ি উৎসব চলছে। ওয়েইফাং শহরের আকাশে এখন ঘুড়ির মেলা। নীল আকাশে অসংখ্য ঘুড়ির ওড়াউড়ি। অসাধারণ সুন্দর সেই দৃশ্য, দেখার অনুভূতিও অনন্য।
সূত্র: bdnews24
তুষারপাত ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে চীনের শানতুং প্রদেশের ওয়েইফাং শহরে ২০ এপ্রিল সকালে ৩০তম আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন হয়। বাংলাদেশসহ প্রায় ৪০টি দেশের ঘুড়ি-প্রেমিকরা পাঁচ দিনের এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন।
ওয়েইফাং শহরের প্রান্তে ফু-ইয়ান-শান আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উড্ডয়ন মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করে চীনের রাষ্ট্রীয় ক্রীড়া প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় ওয়েইফাং ইন্টারন্যাশনাল কাইট ফেডারেশন। ২০ এপ্রিল সকাল ৮টা থেকেই বিস্তৃত প্রান্তরে ঘুড়ি-প্রেমিকরা জমায়েত হতে থাকেন। ওয়েইফাংসহ চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে এর আগের দিন বিকেল থেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে শুরু হওয়া তুষারপাত তখনও চলছিল। পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকায় তুষারের আচ্ছাদন। মেঘলা আকাশ ও তুমুল তুষারপাত উপেক্ষা করে ওয়েইফাংয়ের আকাশে ওড়ে শত শত বিচিত্র বর্ণের ও আকৃতির ঘুড়ি। বরফ ঢাকা মাঠে বিভিন্ন বয়সের শত শত ঘুড়িয়ালের পদচারণা।
সকাল সাড়ে দশটায় উৎসবের উদ্বোধন হয়। চীনের ঐতিহ্যবাহী বেইজিং অপেরার শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সূচনা ঘটে উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক উৎসবের। পরপর পরিবেশিত হয় ড্রাগন নৃত্য, উশু এবং চীনের ঐতিহ্যবাহী অন্যান্য নৃত্য। শিল্পীদের বর্ণিল পরিবেশনা ও মেঘলা আকাশে অসংখ্য বর্ণিল ঘুড়ির উপস্থিতি পরিবেশকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে। ঘুড়ির জন্মভূমি চীনের ওয়েইফাংয়ের এই উৎসবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির উড্ডয়ন চলছিল সেদিন।
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেনুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দলে রয়েছেন মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, মাহমুদ হোসেন তওফিক বাবর, চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাংবাদিক শিহাবুর রহমান ও এই প্রতিবেদক।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ দলের সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আবদুস সামাদ ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় দিন ছিল প্রথম দিনের সম্পূর্ণ বিপরীত। ঝকঝকে রোদ। তুষারের চিহ্নমাত্র নেই কোথাও। চারদিকে ফাল্গুনের বাতাস বইছে। সকাল ৮টা থেকেই মাঠে উড়ছে বৈচিত্র্যময় ঘুড়ি। রয়েছে প্রজাপতি, পাখি, অক্টোপাস, ড্রাগন, স্টিং রে, পুতুলসহ বিভিন্ন রকম ত্রিমাত্রিক ঘুড়ি।
সকাল দশটায় শুরু হল কাটাকাটি লড়াই। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি-লাটাই নিয়ে অত্যাধুনিক হুইল আর ঘুড়ির সঙ্গে লড়াইয়ে নামলেন মো. রফিকুল ইসলাম। পুরান ঢাকার বংশালের যুবক তিনি। ছোটবেলা থেকেই ঘুড়ি উড়িয়েছেন, খেলেছেন কাটাকাটি খেলা। চীনের মাটিতে এসে নিয়মকানুন বুঝে নিতেও সময় লাগল কিছুক্ষণ। ভাষার সমস্যা তো রয়েছেই। তবু চীনের এক প্রতিযোগীর ঘুড়ি ‘ভা কাট্টা’ করে পৌঁছে গেলেন তৃতীয় রাউন্ডে।
বাংলাদেশের আরেক ঘুড়িয়াল আবদুস সামাদও বংশালের যুবক। ছোটবেলা থেকেই বাড়ির ছাদে আর ধূপখোলার মাঠে ঘুড়ি উড়িয়েছেন। চীনে এত ধরনের ঘুড়ি দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হলেন তিনি।
আগামীতে আধুনিক কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন দু’জনই।
কাটাকাটি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলের এক ঘুড়িয়ালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেন হংকংয়ের এক প্রতিযোগী।
ওয়েইফাংয়ে আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবে দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে অংশ নিচ্ছেন শাহজাহান মৃধা বেনু। তিনি বাংলাদেশে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি উড্ডয়নের পথিকৃৎ। দেশজ ঐতিহ্য ঘুড়ি উড়ানোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্বের অধিকারী তিনি। তাঁর সংগ্রহে আছে শতাধিক ধরনের ঘুড়ি। তিনি শুধু ঘুড়ি সংগ্রহই করেন না, নিত্যনতুন নকশার ঘুড়ি উদ্ভাবনও করেন। বললেন, “নিত্যনতুন ধরনের ঘুড়ি ওড়ানো ও দেখার অসাধারণ আনন্দের সঙ্গে দেশবাসীকে পরিচিত করাতে চাই।”
তিনি নতুন নকশার এলইডি ঘুড়িও সংগ্রহ করেছেন। আগামীতে আরও অনেক ধরনের ঘুড়ি উড্ডয়নের কৌশল আয়ত্ব করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। ঘুড়ির নতুন নকশা ও প্রযুক্তি অর্জনে সচেষ্ট তিনি। বললেন, “বাংলাদেশে আমরা বহুদূর এগিয়েছি, তবে এখনও অনেক পথ বাকি। নতুন প্রযুক্তি ও কৌশল অর্জনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমকক্ষ হতে হবে আমাদের।”
বিলম্বে বসন্ত এসেছে এবার। ফু-ইয়ান-শান পাহাড়ি উদ্যানজুড়ে বিভিন্ন গাছে সবুজ পাতা মেলেছে। যেদিকে চোখ রাখি শুধু দেখা যায় চেরি ফুলের সমারোহ। এরই মধ্যে ঘুড়ি উৎসব চলছে। ওয়েইফাং শহরের আকাশে এখন ঘুড়ির মেলা। নীল আকাশে অসংখ্য ঘুড়ির ওড়াউড়ি। অসাধারণ সুন্দর সেই দৃশ্য, দেখার অনুভূতিও অনন্য।
সূত্র: bdnews24
Tagged as: Entertainment, বিনোদন
About the Author
Write admin description here..
Get Updates
Subscribe to our e-mail newsletter to receive updates.
Share This Post
Related posts
0 comments: